শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

দন্তহীন বার্সেলোনাকে গোলশূন্য রুখে দিল লিঁও

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:১১ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার

‘মেসি কখনোই আমাদের বিপক্ষে অপ্রতিরোধ্য নন।’ ম্যাচের আগে এমন বিস্ফোরক মন্তব্যই করেছিলেন অলিম্পিক লিঁও’র প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-মিচেল আউলাস। মেসিকে মানসিক চাপে রাখতেই হয়তো এমন বিদ্রূপ করেছিলেন তিনি। তবে কথাটা তিনি যে উদ্দেশ্যেই বলুন, অলিম্পিক লিঁও’র বিপক্ষে মেসি যে অপ্রতিরোধ্য নন, সেটা গতকাল রাতে আরেকবার প্রমাণ হয়ে গেল।

 

ক্লাব প্রেসিডেন্টের কথাকে সঠিক প্রমাণ করতে ঠিকই মেসিকে নিষ্প্রভ রেখেছে লিঁওর ডিফেন্ডাররা। আর মেসির নিষ্প্রভ থাকার ম্যাচে বার্সেলোনার ভাগ্যটা অনুমিতই। লিঁও’র মাঠ থেকে গোলশূন্য ড্র নিয়ে ফিরেছে বার্সেলোনা।

গত কয়েক মৌসুম ধরেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অ্যাওয়ে ম্যাচে দলকে হতাশা উপহার দিয়েছে চলেছেন মেসি-সুয়ারেজরা। গোল করার মন্ত্রটাই যেন ভুলে যান। গত মৌসুমে যেমন কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে এএস রোমার মাঠে গিয়ে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় মেসি-সুয়ারেজদের বার্সেলোনা। বাদ পড়তে হয় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। ২০১৬-১৭ মৌসুমে তো দুইবার অ্যাওয়ে কষ্ট পেতে হয় বার্সেলোনাকে।

এই শেষ ষোল’র প্রথম লেগেই পিএসজির মাঠে গিয়ে ৪-০ গোলে হেরে যায় বার্সা। ন্যু-ক্যাম্পের ফিরতি লেগে অবশ্য রূপকথার গল্প লিখেছিল বার্সা। নেইমার জাদুতে ৬-১ গোলে জিতে ঠিকই পা রাখে কোয়ার্টার ফাইনালে। কিন্তু শেষ আটের প্রথম লেগে আবার সেই অ্যাওয়ে কষ্ট। জুভেন্টাসের মাঠে গিয়ে বিধ্বস্ত হয় ৩-০ গোলে। গোল কিভাবে করতে হয়, সেটিই ভুলে যান মেসি- সুয়ারেজরা।

 

পিএসজির বিপক্ষে ফিরতি লেগে প্রত্যাবর্তনের রূপকথার গল্প লিখলেও জুভেন্টাসের বিপক্ষে তা সম্ভব হয়নি। বরং ন্যু-ক্যাম্পেও মেসি-সুয়ারেজদের বোতলবন্দী রেখে গোলশূন্য ড্র করে জুভেন্টাস। দুই লেগ মিলিয়ে জুভেন্টাস উঠে যায় সেমিতে। বাদ পড়ে বার্সা।

অলিম্পিক লিঁও পিএসজি, জুভেন্টাস, রোমার মতো বড় ধাক্কা দিতে পারেনি সত্য। তবে পুঁচকে লিঁও’র বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করাটাই বিশ্বসেরা বার্সেলোনার জন্য পরাজয়ের সমান! তবে এই ড্রয়ের পরও কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার দৌড়ে বার্সেলোনাই এগিয়ে। কারণ, আগামী ১৩ মার্চ ফিরতি লেগ ম্যাচটি হবে বার্সেলোনার দূর্গ ন্যু-ক্যাম্পে।

গত শনিবার লা লিগায় পুঁচকে ভাল্লাদোলিদের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় পায় বার্সেলোনা। তবে সেই জয়টা ছিল পেনাল্টি গোলে। মাঠের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ম্যাচ শেষে বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে বলেই দেন, এমন খেললে লিঁও’র বিপক্ষে পার পাওয়া যাবে না। হলো সেটাই। মেসিরা শনিবারের মতোই নিষ্প্রভ থাকলেন পুরো ম্যাচে। এবার আর ভাগ্য দেবীও সহায়তা করেনি।

ফল, লিঁওর মাঠ থেকে হতাশা নিয়েই ফিরতে হয়েছে। ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের স্টাইল মতো বল পজেশনে রেখে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে থাকেন মেসিরা। কিন্তু প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে যে রকম গতি, ক্ষীপ্রতা থাকা দরকার-মেসিদের শরীরি ভাষায় তা ছিল না। বরং শুরু থেকেই তারা কেমন যেন ম্রিয়মাণ। বার্সা বল পজেশনে রেখে খেললেও প্রতি আক্রমণে স্বাগতিক লিঁওই বরং ভয় ছড়িয়েছে বেশি।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য কিছুটা প্রাণ ফিরে বার্সেলোনায় খেলায়। কিন্তু জিততে হলে যা দরকার, সেই গোলই করতে পারেননি মেসি, সুয়ারেজ, ডেম্বেলে, কুতিনহোরা।

ম্যাচ শেষে লিঁও’র প্রেসিডেন্ট মেসিকে নতুন করে খোঁচা মারেননি। তবে ম্যাচের ফল এবং মেসির নিষ্প্রভতাই কথাটা ফিসফিস করে বলে দিচ্ছে—‘লিঁও’র বিপক্ষে মেসি আসলেই নখদন্তহীন, সাধারণ খেলোয়াড়!’