আজকাল’কে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র
সততার লড়াইয়ে কখনও কেউ পরাজিত হয় না

দর্পণ কবীর, লন্ডন থেকে ফিরে
বৃটেনের স্থানীয় নির্বাচনে ঐতিহাসিক লন্ডন শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মেয়র প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের সন্তুান লৎফর রহমান ঈর্ষণীয় এক মাইলফলক তৈরি করেছেন, যা এখন বৃটেনের আভ্যন্তুরীণ রাজনীতিতে আলোচনার ‘ভূ-কম্পন’ সৃষ্টি হয়েছে। বৃটেনের বিভিন্ন মিডিয়ায় এখন লুৎফর রহমানকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। অভিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে মূলধারার রাজনীতিতে লুৎফর রহমানের উল্টো স্রােত থেকে বিপুল ভোটের জয়লাভের সাফল্যগাঁথা শুধু বৃটেনেই নয়, তা ছড়িয়ে পড়েছে সীমানা ছাড়িয়ে বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে, বহির্বিশ্বে বসবাসকারী বাংলাদেশিসহ অভিবাসীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা এবং দৃষ্টান্তুর গল্প উচ্চারিত হচ্ছে। গত ৬ মে লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মেয়র নির্বাচিত হন সিলেটে জন্ম নেয়া সন্তুান লুৎফর রহমান। এই এলাকার মেয়র ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী জন বিগস। দু’দফা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিগত আট বছরের সময়কালে পরাজিত মেয়র ভীষণরকম সফলও ছিলেন। এরপরও তিনি লুৎফর রহমানের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন কেন-এই প্রশ্ন লন্ডনবাসীদের কাছে বিস্ময়কর চিহ্নের মত। প্রশ্ন তাদের সাধারণ মানুষের প্রতীক-লুৎফর রহমান কী এমন জাদুর কাঠি আছে? এর জবাবটা আজকাল প্রতিনিধির কাছে দিয়েছেন তিনি। গত ১২ মে বিকেলে লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় আজকাল প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা হলে প্রশ্নটির জবাবে তিনি বলেন, সততাই শক্তি। রাজনীতি বা জনসেবায় সৎ থাকলে মানুষের ভালবাসা প্রবল স্রােতের মত ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এবারের নির্বাচনে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি সততার লড়াইয়ে কখনও কেউ পরাজিত হয়না। আমিও হইনি। তবে আমাকে ধৈর্য ধরতে হয়েছে। মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। লড়াইয়ে অবিচল থাকতে হয়েছে। তিনি লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সকল ভোটারদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষ করে লুৎফর রহমান যখন ব্রিকলিনের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন দেখা যাচ্ছিলো মানুষের কাফেলা এসে তাঁর সামনে এসে ভিড় জমাচ্ছিলো। তিনি সকলের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলেন, কুশল বিনিময় করছিলেন, যেন রাজনীতির বরপুত্র!
উল্লেখ্য, লুৎফর রহমান যখন টাওয়ার হ্যামলেটসের দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র, তখন একটি অশুভচক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলা দায়ের হয়। তিনি তখন নিজ থেকে মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং দীর্ঘদিন মামলা মোকাবেলা করেন। এই সময়কালে লেবার পার্টির রাজনীতিক জন বিগস দু’দফা মেয়র নির্বাচিত হন। লুৎফর রহমান মামলা থেকে অব্যাহতি পান আদালত থেকে এবং তিনি অভিযোগমুক্ত হন। অনেকে মনে করেছিলেন তিনি হয়তো আর আলোর সুবর্ণ রেখায় উদ্ভাসিত হতে পারবেন না। কিন্তু তাদেও ধারনা মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে জয়লাভ করে অনন্য মাইলফলক তৈরি করতে সক্ষম হন।
আরো উল্লেখ্য যে, টাওয়ার হ্যামলেটস এলকায় তিন লক্ষাধিক লোকের বসবাস। এবার নির্বাচনে দুই লক্ষ পাঁচ হাজার ভোটার নিবন্ধিত হয়েছিল। ভোট কাষ্ট হয়েছিল ৮৬ হাজার ৯ ভোট। লুৎফর রহমান ভোট পেয়েছেন ৪০ হাজার ৮ শত ৪ ভোট। যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৪ শতাংশ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি লেবারপার্টির জন বিগস ভোট পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৪ শত ৮৭ ভোট।
লুৎফর রহমান ১৯৬৫ সালে সিলেটের ওসমানী নগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১০ এবং ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
- প্রবাসীদের লাশ দেশে যাবে বিনা খরচে: অর্থমন্ত্রী
- বাড়ছে আতংক! মালয়েশিয়ায় আবারো অপহরণের কবলে বাংলাদেশি!
- করোনা উপসর্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই পাবেন বিনামূল্য চিকিৎসা
- ইরাকে মর্গের পাশে রাত কাটছে বাংলাদেশিদের!
- করোনা
বিদেশে মারা গেছে ২৭০০ বাংলাদেশি - করোনায় বাংলাদেশ থেকে কোরিয়ায় ফিরলেন ৫৬৬ ইপিএস কর্মী
- সৌদির দুই পতিতালয় থেকে ৭ বাংলাদেশি গ্রেফতার
- মালদ্বীপে বিপদে বাংলাদেশি শ্রমিকরা
- ইতালিতে অচ্ছুত বাংলাদেশিরা
- নিউইয়র্ক পুলিশের উচ্চপদে আরও এক বাংলাদেশী